মেডিকেল কলেজের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আগামী মার্চের প্রথম কিংবা দ্বিতীয় সপ্তাহে আয়োজনের পরিকল্পনা করছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর। এ লক্ষ্যে সকল অংশীজনের সমন্বয়ে একটি নীতিমালার খসড়াও তৈরি করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ে এটি চূড়ান্ত হয়ে যাবে। এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের সম্ভাব্যতার আলোকে ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ কে এম আমিরুল মোরশেদ ১২ ডিসেম্বর রাতে মেডিভয়েসকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
ভর্তি পরীক্ষা কোন মাসে আয়োজনের পরিকল্পনা করছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সব ঠিক থাকলে মার্চের প্রথম সপ্তাহে কিংবা দ্বিতীয় সপ্তাহে এমবিবিএস পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। এ লক্ষ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি। মূল কথা আমরা গত দুইবারের তুলনায় পরীক্ষা এগিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনে আমরাই এগিয়ে। এমনকি বৈশ্বিক মহামারী করোনায় সব কিছু থেমে যায়, চিকিৎসক তৈরির ধারা অব্যাহত রাখতে তখন আমরা খানিকটা বিলম্বে হলেও পরীক্ষা আয়োজন করেছি।’
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘প্রতিবারই ভর্তি পরীক্ষার নীতিমালা আমরা সংযোজন-বিয়োজন করি। গত নভেম্বরের শেষ দিকে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সভায় ভর্তি পরীক্ষার একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করা হয়। এটি আমরা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এটা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।’
ভর্তি বিজ্ঞপ্তি সংশোধনীর কাজও এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা চূড়ান্ত হয়ে গেলে আমরা পূর্ণ হয়ে থাকবো। তখন শুধু বোর্ডের ফলাফল ঘোষণার অপেক্ষায় থাকবো, এটা হলেই আমরা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারবো।’
অধ্যাপক আমিরুল মোরশেদ বলেন, ‘গত ৬ ডিসেম্বর বিজ্ঞান বিভাগের এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। ২০/২১ ডিসেম্বরের তাদের মধ্যে প্রাক্টিক্যাল পরীক্ষা হয়ে যাবে। জানুয়ারির শেষ অথবা ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে এইচএসসির ফলাফল হতে পারে। পরীক্ষা আয়োজনের বিষয়টি অনেকাংশে ফলাফলের ওপর নির্ভরশীল।’
তিনি আরও বলেন, ‘করোনাসহ নানা কারণে গত দুই বছর পরীক্ষা কিছুটা পিছিয়ে ১ এপ্রিল আয়োজন করা হয়। এবার আমাদের চেষ্টা থাকবে পরীক্ষা এগিয়ে নিয়ে আসতে। কারণ ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম ইতিমধ্যে পিছিয়ে গেছে। এগুলো এগিয়ে আনার বিকল্প নেই। এ বিষয়ে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।’
গত ১ এপ্রিল সকালে সারাদেশে একযোগে ২০২১-২২ সেশনের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেশের ১৯টি কেন্দ্রের ৫৭টি ভেন্যুতে পরীক্ষায় অংশ নেয় এক লাখ ৩৯ হাজার ৭৪২ শিক্ষার্থী ও আবেদন করেন এক লাখ ৪৩ হাজার ৯১৫ জন শিক্ষার্থী, যা মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ইতিহাসে সর্বাধিক। পরীক্ষায় প্রতি আসনের বিপরীতে অংশগ্রহণ করেন ৩৩ দশমিক ০৮ শতাংশ শিক্ষার্থী।
চার দিন পর ৫ এপ্রিল ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। এতে পাস করে ৭৯ হাজার ৩৩৭ জন। পাসের হার ছিল ৫৫ দশমিক ১৩ শতাংশ।
এর মধ্যে ছেলের সংখ্যা ৩৪,৮৩৩ জন (৪৩.৯১%) এবং মেয়ের সংখ্যা ৪৪.৫০৪ জন (৫৬.০৯%)।
সরকারি মেডিকেল কলেজে সুযোগপ্রাপ্ত ছেলের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৮৮৫ জন (৪৪.৫৬%), মেয়ে ২ হাজার ৩৪৫ জন (৫৫.৪৪%)।
মেধাতালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করেন সুমাইয়া মোসলেম মিম। ভর্তি পরীক্ষায় তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৯২.৫। তিনি খুলনা মেডিকে কলেজ কেন্দ্রে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন।